• ||
  • Tuesday, April 30th, 2024
  • ||

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সৃষ্টির সেবা

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সৃষ্টির সেবা
  • রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সকল সৃষ্টি আল্লাহর পরিবারের শামিল। সুতরাং যে তাঁর পরিবারের প্রতি সদাচরণ করবে আল্লাহর নিকট হবে সে সবচেয়ে প্রিয়।’ (আল-মুজামুল আউসাত : ৫৫৪১)। 
  • সৃষ্টিকর্তার প্রতিটি সৃষ্টির প্রতিই সেবা ও কল্যাণের মানসিকতা রাখা চাই। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে হাঁটছিল। এমতাবস্থায় সে খুব তৃষ্ণার্ত হলো। সে একটি ক‚প দেখতে পেয়ে তাতে নেমে পড়ল এবং পানি পান করল। তারপর সে বেরিয়ে এলো। সে সময় দেখতে পেল, তৃষ্ণায় কাতর একটি কুকুর জিভ বের করে হাঁপাচ্ছে আর মাটি চাটছে। লোকটি মনে মনে বলল, কুকুরটিকে আমার মতো তীব্র তৃষ্ণায় পেয়েছে। তখন সে কুয়ায় নামল এবং তার চামড়ার মোজায় পানি ভরল। তারপর সে তার মুখ বন্ধ করে ওপরে উঠল এবং কুকুরটিকে পান করাল। মহান আল্লাহ তার এ আমলের কদর করলেন এবং তাকে মাফ করে দিলেন। সাহাবিগণ প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! তা হলে কি আমাদের জন্য এসব প্রাণীর ব্যাপারেও সদাচরণে সওয়াব রয়েছে? তিনি বললেন, প্রতিটি ‘তাজা কলিজায়’ সওয়াব রয়েছে।’ (মুসলিম : ৫৭৫২)
  •  
  • দুনিয়ায় সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা পরসেবা থেকে হাত গুটিয়ে রাখে, হাশরের ময়দানে আল্লাহ কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয় কেয়ামতের দিন আল্লাহ মানুষকে বলবেন- আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, তুমি আমাকে খাদ্য দাওনি! আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম, তুমি আমাকে পানি দাওনি! আমি রুগ্ন ছিলাম, তুমি আমার সেবা করোনি! তখন বান্দা অবাক হয়ে বলবে, হে আমার রব, আপনি তো অভাবমুক্ত, আপনি তো খান না, পান করেন না, তা হলে কীভাবে আপনি ক্ষুধার্ত, পিপাসার্ত ও রুগ্ন হতে পারেন? আল্লাহ বলবেন- আমার অমুক বান্দা ক্ষুধার্ত হয়ে তোমার দুয়ারে হাজির হয়েছিল, তুমি তাকে খাদ্য দাওনি, তাকে খাবার খাওয়ালে আমাকেই খাবার দেওয়া হতো। তুমি পিপাসার্তকে পানি দাওনি, তাকে পানি দিলে আমাকেই পানি খাওয়ানো হতো। অসুখে তোমার প্রতিবেশী ছটফট করেছে, তার সেবা করলে আমাকেই সেবা করা হতো, তুমি কি এটা জানতে না?’ (মুসলিম : ২৫৬৯)
  •  
  • একজন মানুষকে তার পরিবারের সদস্যদের সেবায়ও ব্রতী হতে হবে। বিনিময়ে সে পাবে আল্লাহর তরফ হতে অসামান্য পুণ্য। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমার স্ত্রীর মুখে লোকমা তুলে দেওয়াও সদকা।’ (বুখারি : ২৫৯১)। জন্মদায়িনী মা-জননীর প্রতি সেবা ও সদাচারের বিষয়টিও কোরআন-হাদিসে বর্ণিত হয়েছে দীপ্ত ভাষ্যে। ইরশাদ হয়েছে, ‘পিতা-মাতার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করো এবং তাদের একজন অথবা উভয়ে যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয় তা হলে তাদের সামনে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না।’ (বনি ইসরাইল : ২৩)।
  •  
  • বার্ধক্যে উপনীত হয়ে পিতা-মাতা সন্তানের সেবাযত্নের মুখাপেক্ষী হয়ে পড়েন এবং তাদের জীবন সন্তানের দয়া ও করুণার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তাই এ সময় আরও বেশি খেদমতে আত্মনিয়োগ করা চাই। আসুন আমরা ঘরে-বাইরে খেদমত-মনস্ক হই; খেদমতের মাধ্যমে অর্জন করি খোদার তুষ্টি ও সন্তুষ্টি।
comment
Comments Added Successfully!