• ||
  • Saturday, April 20th, 2024
  • ||

মানবজীবনে সুন্নতের গুরুত্ব

মানবজীবনে সুন্নতের গুরুত্ব
  • মহানবী (সা.) এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের ঐ সকল নীতি-আদর্শ যা উম্মতের জন্য আমলযোগ্য ও শরীয়তে পালনীয়, তাকে সুন্নত বলে। মহান আল্লাহকে ভালোবাসতে হলে প্রিয়নবী (সা.) কে ভালোবাসতে হবে হৃদয়ের গভীর থেকে। আর রাসূলুল্লাহ (সা.) এর প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্য প্রদর্শনের একমাত্র উপায় হলো সুন্নতের অনুসরণ করা। সঙ্গত কারণেই মানব জীবনে সুন্নতের গুরুত্ব অপরিসীম।
  •  
  • মহান আল্লাহ্ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, (হে নবী) আপনি বলে দিন তোমরা যদি আল্লাহ্কে ভালবাসতে চাও, তাহলে আমার অনুসরণ করো। তবে আল্লাহ্ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ্ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা আল ইমরান : আয়াত ৩১)
  • আল্লাহ্ তা’আলা মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে আরো ইরশাদ করেন, তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ্ (সা.) এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। বিশেষ করে ঐ ব্যক্তির জন্য, যে আল্লাহ্ ও শেষ দিবসের আশা পোষণ করে এবং আল্লাহ্কে বেশি স্মরণ করে। (সূরা আহযাব, আয়াত-২১)
  •  
  • মহান আল্লাহ্ তাআলা পবিত্র কোরআনের অন্যত্র ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করে সে আল্লাহ্রই আনুগত্য করল, আর যে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে, আমি আপনাকে তাদের হেফাজতকারী রূপে প্রেরণ করিনি।’ (সূরা নিসা, আয়াত-৮০)
  •  
  • হযরত রাসূলুল্লাহ্ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আমার সুন্নতকে ভালোবাসবে, সে যেন আমাকেই ভালোবাসল। আর যে আমাকে ভালোবাসবে, সে জান্নাতে আমার সাথে থাকবে। (তিরমিজি)। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত,  রাসূলুল্লাহ্ (সা.) ইরশাদ করেন, আমার প্রত্যেক উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে; তবে যে অস্বীকারকারী সে ব্যতীত। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন- ইয়া রাসূলুল্লাহ্ (সা.) অস্বীকারকারী কে? রাসূল (সা.) বললেন, যে ব্যক্তি আমাকে অনুসরণ করে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর যে আমার অবাধ্যতা করে সে অস্বীকারকারী। (সহীহ্ বুখারী)
  •  
  • খোলাফায়ে রাশেদীন ও সাহাবায়ে কেরামের সুন্নতের অনুসরণের প্রতি গুরুত্বারোপ করে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, বনী ইসরাঈল সম্প্রদায় বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিল, আর আমার উম্মত তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে, সকলেই জাহান্নামে যাবে; কিন্তু একটি দল জান্নাতে যাবে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, এই দল কারা? রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, যারা আমার ও আমার সাহাবাগণের আদর্শের উপর অটল থাকবে। (সুনানে তিরমিজি) 
  •  
  • হযরত ইরবাজ ইবনে সারিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেন, আমি তোমাদেরকে খোদাভীতির উপদেশ দিচ্ছি এবং আমীরের আদেশ মান্য করতে উপদেশ দিচ্ছি; যদিও তিনি একজন হাবশী গোলাম হন। কেননা আমার পরে তোমাদের থেকে যারা বেঁচে থাকবে, অচিরেই তারা বহু মতভেদ দেখতে পাবে। তখন তোমরা আমার সুন্নত ও সুপথপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নতকে অবশ্যই আকড়ে ধরবে এবং তোমরা তা মাড়ির দাঁত দ্বারা শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে থাকবে। (মুসলিম, আবু দাউদ) 
  •  
  • এমন আরো অনেক আয়াত ও হাদিস দ্বারা একথা প্রতীয়মান হয় যে, মহান আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল (সা.) কে ভালোবাসার চূড়ান্ত মাপকাঠি হলো রাসূলুল্লাহ (সা.) এর অনুসরণ করা। রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর খোলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নতের মধ্যে রয়েছে উম্মতের প্রকৃত সফলতা, প্রশান্তি ও কল্যাণ। পক্ষান্তরে রাসুল (সা.) এর আদর্শ পরিপন্থি যাবতীয় পথ-মত, রীতি-নীতি, আইন ও আদর্শ অনুকরণ করে শান্তি সফলতা ও কল্যাণ অর্জন করা আদৌ সম্ভব নয়। তাই মানব জীবনের সর্বক্ষেত্রে সুন্নতের অনুসরণই হলো ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির একমাত্র উপায়।
  •  
  • লেখক : মুফতি হেলাল উদ্দীন হাবিবী
  •     
comment
Comments Added Successfully!