• ||
  • Tuesday, April 30th, 2024
  • ||

দুঃখে-কষ্টে হতাশ না হওয়া

দুঃখে-কষ্টে হতাশ না হওয়া

মাহফুজ আরেফীন

স্বপ্ন দেখা স্বাভাবিক। তবে সব স্বপ্নই বাস্তব হয় না কিংবা পূরণ হয় না। কোনো স্বপ্ন পূরণ না হলে অথবা কাজের ইচ্ছামতো ফল না পেলে মানসিকভাবে হতাশ হয়ে যায় অনেকে। অথব ইসলাম বলে স্বপ্নপূরণে ব্যর্থ হলে হতাশ হওয়া যাবে না। মানুষ জানে না, সে যে দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন, তা তাকে কত বড় বিপদ থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। কোনো ব্যক্তির জ্বর হয়েছে, সে জ্বরের কষ্ট অনুভব করছে। কিংবা কোনো ব্যক্তি চাকরির জন্য চেষ্টা করছে কিন্তু সে চাকরি পায়নি, চাকরি না পাওয়ার কষ্ট সে অনুভব করছে। কিংবা ঘরের মালামাল চুরি হয়ে গেছে, এ কষ্ট সে অনুভব করছে।
     
কিন্তু সে জানে না, যদি তার এ কষ্ট না আসত, তা হলে অন্য কষ্ট আসত। সেই কষ্টটি এর চেয়ে বড় ছিল। যেহেতু বিষয়টি তার জানা নেই, তাই যে কষ্ট সে অনুভব করছে তাই তার কাছে বড় মনে হচ্ছে। অনেক সময় মানুষ নিজেই বলে, বিপদ অল্পের ওপর দিয়ে গেল, তা না হলে কত বড় বিপদ ছিল। আল্লাহ বলেন, ‘হয়তো তোমরা যা অপছন্দ করো তা-ই তোমার কল্যাণকর আর তোমরা যা পছন্দ করো, সেটা হতে পারে অকল্যাণকর বস্তুত আল্লাহ জানেন। কিন্তু তোমরা জানো না।’ (সুরা বাকারা : ২১৬)
     
আল্লাহর আশ্রয় ছাড়া এবং তাঁর রহমতের ছায়াতলে আশ্রয় নেওয়া ছাড়া কোনো রাস্তা নেই। মানুষের জীবনের দুঃখ-কষ্ট, বিপদ-মসিবত, ঘটনা-দুর্ঘটনা সবই আল্লাহ তায়ালার তাকদিরের ফয়সালার তীর। এসব তীর থেকে বাঁচার যদি কোনো জায়গা থাকে তা হলে তা আছে আল্লাহ তায়ালার রহমতের ছায়াতলে। এ ছাড়া অন্য কোনো জায়গা নেই। ছোট বাচ্চাকে যখন মা মারে সে মাকে আরও জড়িয়ে ধরে।
     
অথচ সে দেখছে মা তাকে মারছে। কারণ বাচ্চা জানে, যে মা তাকে মারছে, স্নেহ ও ভালোবাসাও আমি তার কাছেই পাব। তাই যখনই কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে তখন ভাবতে হবে, এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়েছে এবং তার রহমতের কোলেই আমি আশ্রয় পেতে পারি। হাদিসে এসেছে, ‘আল্লাহ যখন বান্দার প্রতি কল্যাণ ও মঙ্গলের ইচ্ছা করেন তখন তাকে তার ভাগ্যের ওপর সন্তুষ্টি দান করেন এবং তার ভাগ্যে তার জন্য বরকত দান করেন।’ (কানযুল উম্মাল)। কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ যদি আপনার মঙ্গল চান, তবে তার অনুগ্রহ প্রতিহত করার কেউ নেই। তার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছে তার কাছে সেটা পৌঁছান।’ (সুরা ইউনুস : ১০৭)
     
অনেকে হতাশ হয়ে হরেক রকম নেশায় জড়ায়। এতে সাময়িক স্বস্তি পাওয়া যায় কিন্তু হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। নেশা করা ইসলাম ধর্মে হারাম। তাই যারা পাওয়া, না পাওয়া জীবনে হতাশ হয়ে পড়েছে তাদের উচিত নেশা না করে ধৈর্য ধারণ করা এবং নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা।

কেননা ধৈর্যশীলদের সঙ্গে থাকেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। আল্লাহ বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা : ১৫৩)। আমাদের উচিত সাময়িক ব্যর্থতা, বাধা-বিপত্তি ও না পাওয়ার বেদনায় হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ওপর ভরসা করা। আল্লাহ আমাদের হতাশামুক্ত জীবন দান করুন। আমিন।

comment
Comments Added Successfully!