• ||
  • Monday, April 29th, 2024
  • ||

রাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন যেভাবে

রাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন যেভাবে
  • ‘রাগ’ একটি স্বভাবজাত বিষয়। নিজের অজান্তেই মানুষ রেগে ওঠে। রাগ সাধারণত প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য হয়ে থাকে। রাগের সময় মানুষের বুদ্ধি ঠিক থাকে না! মুখে অন্যায় কথা বেরিয়ে পড়ে। অনেক সময় হাতেও সংঘটিত হয় অপরাধমূলক কাণ্ড। আর এ রাগের পরিণামে অনেক ক্ষতি ও লজ্জার সম্মুখীন হতে হয়। রাগ মানুষের ইচ্ছাধীন না হলেও রাগ নিয়ন্ত্রণ করা সাধ্যের ভেতরে। তাই আমাদের উচিত সর্বপ্রকার রাগ দমন করে চলা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘মন্দকে ভালো দ্বারা দমন করো’। রঈসুল মুফাসসিরীন হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, উক্ত আয়াতের মর্ম হলো, ‘রাগের সময় ধৈর্যধারণ করা এবং মন্দ ব্যবহার ক্ষমা করা।’ 
  •  
  • নবীজি সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি দেরিতে রাগান্বিত হয় এবং অতিশীঘ্র রাগ নিয়ন্ত্রণ করে, সে ব্যক্তি অতি উত্তম। আর যে ব্যক্তি অতিশীঘ্র রাগান্বিত হয় এবং দেরিতে রাগ নিয়ন্ত্রণ করে সে ব্যক্তি অত্যন্ত মন্দ।’ মিশকাত শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘এক ব্যক্তি রাসুল সা. কে আরজ করে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ সা.! আমাকে উপদেশ দান করুন। তিনি ইরশাদ করলেন, ‘রাগ করো না।’ ওই ব্যক্তি একই কথা কয়েকবার আবৃত্তি করলে রাসুল সা. একই উত্তর দিলেন।’ অন্যত্র নবীজি সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি কুস্তিগিরীতে (মল্লযুদ্ধে) ক্ষমতাবান, সে বীরপুরুষ নয় বরং যে ব্যক্তি রাগের সময় নিজকে সামলিয়ে নিতে পারে, সে ব্যক্তিই বীরপুরুষ।
  •  
  • রাগ নিয়ন্ত্রণের অনেক পন্থা রয়েছে। তন্মেধ্যে-
  • ১. রাগ হলে ‘আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রজিম’ পড়ে নেয়া। 
  • ২. ‘লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিউল আজিম’ পড়া। 
  • ৩. যার উপর রাগ হয় তাকে সম্মুখ থেকে সরিয়ে দেয়া বা নিজে অন্যত্র সরে যাওয়া। 
  •  
  • ৪. তারপর এ চিন্তা করা যে, সে আমার কাছে যতটুকু অপরাধী, আমি আল্লাহর নিকট তার চেয়ে বেশি অপরধী। আমি যেমন চাই আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন, আমারও তেমন উচিত তাকে ক্ষমা করা। হাদিসে আছে, হজরত মুসা আলাইহিস সালাম, আরজ করলেন, ইয়া রাবে ইলাহি! আপনার বান্দাগণের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় বান্দা কে? মহান আল্লাহ পাক বলেন, ‘যে ব্যক্তি (প্রতিশোধের) ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও (অপরের দোষ) ক্ষমা করে দেয়।’
  •  
  • ৫. এতেও রাগ না কমলে দাঁড়ানো থাকেল বসে পড়বে, বসে থাকলে শুয়ে পড়বে। নবী করিম সা. বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ দাঁড়ানো অবস্থায় রাগান্বিত হলে, তার বসে যাওয়া কর্তব্য। যদি তাতে রাগ দমন হয় তবে ভালো, অন্যথায় তার শুয়ে পড়া কর্তব্য।’
  • ৬. তাতেও রাগ না কমলে ঠাণ্ডা পানি পান করবে বা অজু কিংবা গোসল করে নিবে। রাসুল সা. বলেন, রাগ শয়তানের প্ররোচনা থেকে এবং শয়তান আগুন থেকে সৃষ্ট হয়েছে। আগুন পানি দ্বারা নির্বাপিত হয়। কাজেই যখন তোমাদের মধ্যে কেউ রাগান্বিত হয় তখন তার কর্তব্য হলো ওজু করে নেয়া।
  •  
  • ৭. সব সময় এ চিন্তা করবে যে, আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত কিছুই হয় না। অতএব আমি আল্লাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঝগড়া করার কে?
  • উল্লেখ্য, রাগ সব সময় নিন্দনীয় নয় বরং কখনও কখনও জরুরিও। অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে রাগ করে তার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো আবশ্যক। রাসুল সা. বলেন, ‘কোনো প্রকার অন্যায় বা গুনাহর কাজের বিরুদ্ধে ক্রোধ (রাগ) প্রদর্শন করা একান্ত আবশ্যক।’ 
comment
Comments Added Successfully!