• ||
  • Friday, April 26th, 2024
  • ||

জাহান্নাম থেকে মুক্তির সুযোগ

জাহান্নাম থেকে মুক্তির সুযোগ

রমজানের রহমত ও মাগফিরাতের দশক শেষে তৃতীয় এবং শেষ দশক শুরু হয়েছে। এ দশককে বলা হয় ‘ইতকুম মিনান্নার’ তথা জাহান্নাম থেকে মুক্তির দশক। হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) শাবান মাসের শেষ দিন আমাদের মাঝে খতিব হিসেবে দাঁড়ালেন এবং বললেন, ‘মাহে রমজান এমন একটি মাস যার প্রথম ভাগ রহমত, মধ্যবর্তী ভাগ মাগফিরাত আর শেষ ভাগে জাহান্নাম থেকে মুক্তি (নাজাত) দেওয়া হয়।’ (ইবনে খুজাইমা : ৩/১৯১)
বরকতময় নানা ইবাদতের কারণে রমজানের শেষ দশক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে এই দশকেই রয়েছে ইতিকাফ এবং লাইলাতুল কদরের মতো মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) এই দশকে ইতিকাফ করেছেন। সাহাবাদেরও করতে বলেছেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) প্রতি রমজানে শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন। কিন্তু যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বছর তিনি ২০ দিন ইতিকাফ করেছেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)। ইন্তেকালের আগের বছর অসুস্থতার কারণে ইতিকাফ না করতে পারায় ইন্তেকালের বছর কাজাসহ একত্রে ২০ দিন ইতিকাফ করেছিলেন তিনি।
ইতিকাফকারীর জন্য রয়েছে প্রভুত কল্যাণ ও পুরস্কার। যে ব্যক্তি একনিষ্ঠ মনে সওয়াবের নিয়তে ইতিকাফ করেন, তার সব সগিরা গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘ইতিকাফকারী ব্যক্তি যাবতীয় পাপ থেকে মুক্ত থাকে আর ইতিকাফে লিপ্ত থাকার জন্য কোনো ব্যক্তি বাইরের কোনো নেক কাজ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকলেও ওই নেক কাজগুলোর পূর্ণ নেকি সে লাভ করবে।’ (ইবনে মাজা)। আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের শেষ দশক ইতিকাফ করবে, তার জন্য দুই হজ ও দুই ওমরার সওয়াব রয়েছে।’ (বায়হাকি)
রমজানের শেষ দশকে পাপীদের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় শুধু এতটুকুই এই দশকটির গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার জন্য যথেষ্ট। উপরন্তু এই দশকের পাঁচটি বেজোড় রাতের কোনো একটিতে লাইলাতুল কদর নামের একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাস থেকেও শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয় আমি এটি (কোরআন) নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। তোমাকে কিসে জানাবে ‘লাইলাতুল কদর’ কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।’ (সূরা কদর : ১-৩)। আম্মাজান আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করলেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করো।’ (মেশকাত : ১৯৮৩)
মাহে রমজানের প্রতিটা দিন, প্রতিটা ক্ষণকে রাসুল (সা.) গুরুত্ব দিতেন। তবে সর্বদিক বিবেচনায় রমজানের শেষ দশককে রাসুল (সা.) অত্যাধিক গুরুত্ব দিতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রমজানের শেষ দশক শুরু হলেই রাসুল (সা.) তার কোমর শক্ত করে বেঁধে নিতেন। এই সময়ের রাতগুলো জেগে থাকতেন এবং পরিবারের সবাইকে সজাগ করতেন।’ (বুখারি : ১৮৮২)। অতএব, আমরাও রমজানের এই দশকে কাজে লাগিয়ে, বেশি বেশি দোয়া-ইবাদত করে নাজাত চাইতে হবে। জান্নাম থেকে মুক্তি পেতে পারি। আল্লাহ আমাদের কবুল করুক।
 

comment
Comments Added Successfully!