• ||
  • Friday, May 17th, 2024
  • ||

সাহরির বিশেষ ফজিলত ও বিধান

সাহরির বিশেষ ফজিলত ও বিধান

রমজানুল মোবারকে প্রতিদিন আমরা কিছু মুহূর্ত পার করি যেগুলো একইসাথে আনন্দঘন ও বরকতময়। এর মধ্যে অন্যতম হলো, রাতের শেষ ভাগে সুবহেসাদিকের পূর্ব মুহূর্ত; যখন আমরা দিনের সিয়াম সাধনার উদ্দেশ্যে সাহরি গ্রহণ করি।
সেহরি রোজার অনন্য দান। বাহ্যিক ভাবেতা কেবল খাবার গ্রহণ মনে হলেও বাস্তবে অন্যান্য খাবার ও সাহরির মাঝে রয়েছে বিস্তর ফারাক। কেননা সাহরি একটি বরকত পূর্ণ খাবার। হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা সাহরি খাও, নিশ্চয় সাহরিতে বরকত রয়েছে।’ (বুখারি ওমুসলিম)
গাহরি গ্রহণ কারীর ওপর আল্লাহর রহমত নাজিল হয়। ফেরেশতারা তার জন্য দোয়া করে। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, সাহরি একটি বরকতময় খাবার। তাই তোমরা কখনো একে বাদ দিয়োনা। এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরি খেয়েনাও। কেননা স্বয়ং আল্লাহ সাহরি গ্রহণকারীদেও প্রতি রহমত নাজিল করেন। তাঁর ফেরেশ্তাগণ তাদের জন্য মাগফিরাতের দুআ করে। (মুসনাদে আহমদ : ১১০৮৬)
গাহরি করা নবীজি (সা.) এর প্রিয় আমল, তাই তিনি সামান্য শুকনো খেজুর দিয়ে হলেও সাহরি গ্রহণ করতেন। হযরত আনাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) সাহরির সময় আমাকে ডেকে বললেন, হে আনাস! আমি রোজা রাখার ইচ্ছা করেছি, আমার সামনে কিছু খাবার পরিবেশন কর। আমি তাঁর সামনে শুকনো খেজুরের একটি পাত্র এবং পানি পরিবেশন করলাম। অতঃপর তিনি হজরত বেলাল (রা.) এর (তাহাজ্জুদের) আযানের পর সাহরি গ্রহণ করলেন। (সুনানে নাসায়ি)
গাহরি কাফেরদের রোজার ও আমাদের রোজার মাঝে পার্থক্য রেখা টেনে দেয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ইহুদি খ্রিস্টান এবং আমাদের রোজার সময় এর মধ্যে শুধু   শাড়ি পার্থক্য বিদ্যমান থাকে অর্থাৎ তারা সাহরি খায়না, আমার সাহরি খাই। (মুসলিম : ২৬০৪)। তাই সামান্য কিছু দিয়ে হলেও সাহরি গ্রহণ করা জরুরি। এমন একটি বরকত পূর্ণ আমল কিছুতেই পরিত্যাগ করা উচিত নয়। এখানে কয়েকটি মাস আলা মনে রাখা দরকার।
সাহরি যে কোনো খাবার দ্বারা গ্রহণ করা যায়। তবে নবীজি (সা.) যেহেতু সাহরিতে খেজুর খেতেন তাই এক দুটি খেজুর খেয়ে নেওয়া উত্তম।
যদি কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে সাহরিনা করে, কিংবা ঘুমের ঘোওে সাহরির সময় পার হয়ে যায় তাহলে তার রোজার কোন ক্ষতি হবেনা। অন্যান্য দিনের মতো রোজা রেখে দিবে। কেননা, রোজার জন্য নিয়ত আবশ্যক। সাহরি নয়।
সাহরি বিলম্বে করা উচিত এবং কল্যাণের কারণ। আয়েশা (রা.) বলেছেন, তিনটি জিনিস নবুয়্যতের অন্তর্ভুক্ত। দ্রুত ইফতার করা, সাহরি বিলম্বে করা এবং ডানহাত বামহাতের উপর রাখা। 
বিলম্বেও পরিমাণ কতটুকু- এ বিষয়ে ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন, রাতকে ছয় ভাগ করে শেষ অংশের মধ্যে খাবার খাবে। যেমন সূর্যাস্ত থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত ১২ঘণ্টা। তাহলে শেষ দুই ঘণ্টা হলো সাহরির সময়। এর মধ্যেও বিলম্ব করা উত্তম; যেন শরীরে কর্মক্ষমতা এবং শক্তি বিদ্যমান থাকে।
তবে এতটা দেরি করা উচিত নয় যে, সুবহে সাদিক হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। কেননা কেউ সাহরিতে এ ধারণা কওে বিলম্ব করল যে, এখনে ারাত বাকি আছে। কিন্তু পওে জানতে পারল, সুবহেসাদিক হওয়ার পরও সাহরি খেয়েছি। তাহলে রোজা হবেনা কাযা আবশ্যক হবে। কাফফারা দিতে হবেনা। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি : ১/১৯৪) 
ক্যালেন্ডার বা সাহরির সময়সূচী দেখে সাহরি শেষ কওে দিবে। আজান পর্যš Íবিলম্ব করবেনা। কেননা সুবহেসাদিক হওয়ার পর আযান দেওয়া হয়। সুতরাং কেউ যদি আযান পর্যন্ত সাহরি খায় তাহলে তার রোজা হবেনা। এবং সে রোযা কাজা করতে হবে।
 

comment
Comments Added Successfully!