• ||
  • Friday, May 17th, 2024
  • ||

যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায়

যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায়

রোজা আল্লাহর ফরজ বিধান। প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ কারোর জন্য রোজা না রাখার কিংবা ভাঙ্গার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে এমন অনেক কাজ আছে যেগুলোর মাধ্যমে রোজা ভেঙে যায়। যার ফলে কখনো কাফফারা, কখনো কাযা ওয়াজিব হয়। আমাদের অনেকেই সে সম্পর্কে অবগত নয় বলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। নিজের অজান্তেই রোজা ভেঙে গেলেও পরবর্তীতে রাখার কোন গরজবোধ হয় না। তাই রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি।

যেসব কারণে রোজা ভেঙ্গে যায় :
১. রোজা অবস্থায় অসুস্থতার কারণে ইনহেলার (Inhelar) ব্যবহারের দ্বারা রোজা ভেঙ্গে যায়। (শামী: ৩/৩৬৬)
২. রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃত বমি করলে, অথবা মুখে বমি চলে আসার পর তা পরিমাণে অল্প হলেও ইচ্ছাকৃত গিলে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যাবে। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক: ৪/১৯৭)
৩. যদি নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়ার পর মুখে চলে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। (তাতারখানিয়া: ৩/৩৮৩)
৪. রোজাদার যদি মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে, আর এমতাবস্থায় সুবহে সাদিক হয়ে যায় এবং পানের কিছু অংশ পেটে চলে যায় তাহলে তার রোজা হবে না। পরে কাজা করতে হবে ।কাফফারা দিতে হবে না। (শামী: ৩/৩৭৪)
৫. কুলি করার সময় যদি অনিচ্ছাকৃত পানি গলা দিয়ে পেটে চলে যায় তাহলে রোজা কাজা করতে হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না। আর যদি রোজার কথা স্মরণই না থাকে, পানি মুখে নিয়ে খেয়ে ফেলে তাহলে রোজা ভাঙ্গবে না। (তাতারখানিয়া: ৩/৩৭৮)
৬. নাক অথবা কানের মধ্যে তেল দেওয়ার দ্বারা রোজা ভেঙ্গে যাবে। কারা করতে হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না। (হেদায়া: ১/২২০)
৭. কেউ রোজার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার করল, অতঃপর রোজা ভেঙ্গে গেছে মনে করে ইচ্ছা করে পানাহার করল, তাহলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে এবং কাজা করা জরুরি। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ৬/১৪৯)
৮. পাথরের কণা, মাটি, ঘাস, কাগজ ইত্যাদি; যা সাধারণ আহারযোগ্য নয় বা কোনো উপকারে আসে না তা খেলেও রোজা ভেঙ্গে যাবে এবং কাজা করতে হবে। (বাযযাযিয়া: ৪/৯৯)
৯. দাঁত থেকে রক্ত বের হয়ে যদি থুথুর সঙ্গে ভেতরে চলে যায়, আর রক্তের পরিমাণ থুথুর সমান বা বেশি হয় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। (বুখারী: ১/২৬০)
১০. বিড়ি-সিগারেট, হুঁকা পান করলে রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা করা জরুরি। (শামী:  ৩/৩৬৬)
১১. কঠিন অসুস্থতার ফলে যদি কোনো মানুষ রোজা ভেঙ্গে ফেলে, তাহলে শুধু কাজা করতে হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না। (তাবয়ীনুল হাকায়েক: ২/১৮৯)
১২. যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত রোজা ভেঙ্গে ফেলে, অতঃপর খুব অসুস্থ হয়ে যায়, অথবা কোনো নারীর প্রিয়ড হয়/মাসিক হয়, তাহলে শুধু কাজা করতে হবে। কাফফারা দিতে হবে না। (হিন্দিয়া: ১/২০৬)
১৩. রোজা অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে স্বামী জোর করে সহবাস করলে স্ত্রীকে শুধু কাযা আদায় করতে হবে। কাফফারা দিতে হবে না। (তাতারখানিয়া: ৩/৩৯৪)
১৪. যদি কোনো ব্যক্তি রোজা অবস্থায় সফর করে তার জন্য কোনো ওজর ছাড়া রোজা ভেঙ্গে ফেলা অনুচিত। যদি ভেঙ্গে ফেলে তাহলে শুধু কাজা জরুরি, কাফফারা নয়। (আলমগিরী: ১/২০৬)
১৫. যদি কোনো পুরুষের পেশাবের রাস্তায় কোনো ওষুধ দেওয়া হয়, আর তা অণ্ডকোষ পর্যন্ত পৌঁছে, তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। অন্যথায় নয়। (তাবয়ীনুল হাকায়েক: ২/১৮৩)
১৬. কোন নারীর লজ্জাস্থানে ওষুধ লাগানোর সঙ্গে সঙ্গেই রোজা ভেঙে যাবে (বাহরুর রায়েক: ২/৪৮৮)

comment
Comments Added Successfully!